মহামান্বিত রজনীর প্রস্তুতি: লাইলাতুল কদর
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যদি কেউ লাইলাতুল কদর খুঁজতে চায় তবে সে যেন তা রমজনের শেষ দশ রাত্রিতে খোঁজ করে। “(মুসলিম, হাদিস নং : ৮২৩)।
নিঃসন্দেহ আমি এটা ( কুরআন ) অবতারণ করেছি শবে-কদরে। শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে।এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ( সূরা আল-কদর ১-৫)
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লহর রাসূল ( সা.) বলেন “ যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে প্রতিদানের আশায় লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদত করবে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”
(সহীহ বুখারী, হাদিস নংঃ ১৯০১)
ইবাদত পরিকল্পনায় যে বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে:
- ইতেকাফে থাকাঃ লাইলাতুল ক্বদর অর্জনের সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ উপায় হলো, রমজানের শেষ দশদিন ই’তিকাফ করা। রাসুলুল্লাহ ( সা.) কখনো ই’তিকাফের আমলটি ছাড়েননি।
- সমস্ত 10 রাত জুড়ে ইবাদতঃ যেহেতু রমজান 29 বা 30 দিনের হতে পারে, লায়লাতুল কদর রমজানের শেষ 10 রাতের যেকোনো একটি হতে পারে। তবে বেজোড় রাতগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া।
- **দোয়া পাঠ করাঃ “**আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্নার (হে আল্লাহ, আমাকে জাহান্নাম থেকে পরিত্রা দাও)” “আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল জান্নাতা (হে আল্লাহ তোমার নিকট জান্নাত প্রার্থনা করছি)” - বেশি বেশি এই দোয়াগুলো পাঠ করা।
- সাধ্যমত দান করুনঃ রমজানে প্রতিটি ভালো কাজের নেকি ৭০ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ মাসে যত বেশি দান-সদকা করা যাবে, তা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। তাই বেশি বেশি দান-সাদকা করার চেষ্টা করা। সম্ভব হলে অনাথ এবং এতিমদের সেহরি/ইফতারি করানো।
- বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়াঃ হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি বলবে, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’(‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করা পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।’) (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস নংঃ ৩৮৫০)
- সময় অপচয় না করাঃ ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রমাযানের শেষ দশক আসত তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহিহ মুসলিম হাদিস নংঃ ১১৭৪)। এজন্য হাতের কাজ দ্রুত শেষ করে নিয়ে ইবাদতে মসগুল থাকি এবং সময় অপচয় না করি।
- বেশি বেশি দোয়া করাঃ এই দশ রাতে আল্লহর কাছে চোখের পানি ফেলে বেশি বেশি দোয়া করা। সমস্থ মুসলমানের জন্য দোয়া করা। প্রিয় মানুষদের নাম ধরে ধরে দোয়া করা। এবং সবার হেদায়েতের দোয়া করা।
আল্লাহ্ তা’লা আমাদের সবাইকে লাইলাতুল ক্বদর অর্জনের তৌফিক দান করুক এবং সবাইকে সুস্থ ও হেফাজতে রাখুক যেনো আমরা সঠিকভাবে আল্লহর ইবাদত করতে পারি।
Copyright © 2023 Mozahidul Islam | Made with Notion